বাঁকে বাঁকে গোলাঘর : তানিয়া চক্রবর্তী



গ্লানি থেকে গ্লানি অবধি খাটুনি ও  দ্বন্দ্ব
পরাশ্রয়ী তাড়নায় শষ্যসাধনা হয় বিছানায়
কী ময়লা প্রেমের পর
দ্রাঘিমা দ্রষ্টব্যকে চড় মেরে
ফেলে দিল ড্রেনে         !
সেই থেকে জৈবিক পৃথিবীতে প্রেমের পর
যোনির কবিতা লিখেছে কারা যেন!

এসো ঘি, মধু ও প্রাণায়ামে
কর্ণমাফিক নিরাময় খোঁজো
আমার আলো, যা তোমার ভেতর প্রতিসরণ
শেখার পর কবচ পড়ে ডিগবাজি খাচ্ছে
তাকে মিলনের আগে তীব্র স্বমেহন শেখাও
শব্দ, উপমা, শীৎকার ও চিৎকার করাও
ধুকপুক দাও, দাও দরদাম
আঁচিয়ে আঁচিয়ে বিশ্বাস করো
তার লিপস্টিক কামনা !
বৃক্কের পাইপের স্থিতিস্থাপক ধর্ম চেপে দেখো,
শোধনাগার কত বর্জ্যের বন্ধুতা নিয়ে বড় হচ্ছে

সাইকেলে হ্যান্ডেল ধরে দাঁড়ানো মেয়েটা
কুয়োতে অভিশাপ ও ভ্রূণ জমানোর পর
আধুনিকার কোমর দেখছে
কোমর থেকে ধুপধাপ পড়ে যাচ্ছে লাল, সাদা
দুধে আলতা অসমাপিকা পাপ

আমরা আড্ডাঘরে চুমু ও কুঁড়ি প্রসঙ্গে ঘুরছিলাম
পৃথিবীর কেন্দ্ররসায়ন ও নাভির অবিনশ্বর আদেখলামোর পর
আমরা জম্বিদেরও প্রণাম করব হয়ত বা!
এই বিরাট লাইন যা অ্যানাকোণ্ডার মতো
দেশজ বাতের বেদনাকে মৌমাছির হুলের ওষুধের লোভ দেখাচ্ছে
তাকে সহিষ্ণুতা বা মাইগ্রেন বলে ডাকছি---

গাঢ় গাঢ় পেগের পর
রেটিনায় স্ত্রী,প্রেমিকা, রক্ষণশীল উপেক্ষা
এক হয়ে লিফটের ত্বরণ শেখাচ্ছে,
বোধ ও অবোধ এক মেঝেতে দর্শন লোটাচ্ছে
একই ভাঁড়ে চা  -এর তারল্য ও মাটির কাঠিন্য চুষছে
“চা-চা-চা” –এর আগের ওয়ান টু
একটা ম্যাজিক ভূমিকার ভেলকিবাজি
পাকদণ্ডীতে বসে পৃথিবীর বিনাইন তিল দেখেছেন ঈশ্বর
আর মিমিক্রিসুলভ মানুষ অমানুষ হচ্ছে বেঘোরে
তারপরও অমানুষ মানুষের জন্য যজ্ঞের কবিতা লিখবে
ক্রিমিনালও কাব্যি করবে বিবর্তনের
এখানে “যাচ্ছেতাই” আমাদের মুক্তির মিউকাস বলে
পিছলে পিছলেও ওড়ার স্বপ্ন দেখি,
কনিক্যাল ফ্লাস্কে আমাদের কায়েমী সন্তান বড় হবে
মায়ের পেট ছাড়া আর বাবার বিষণ্ণ স্পার্ম সক্রিয়তায়
বালির বৈভবে অশবক্ষুরাকৃতি হ্রদের মতো
বালা নিয়ে গ্রহাণুপুঞ্জকে ধমকাবে নিয়তির গমনের জন্য
আমাদের লজ্জাবতী প্রাণ মাটির নীচে ঝিমোচ্ছে
বাকিটা তালি মারার খেলা--- ক্রমশ খেলে যাব
প্রতিপক্ষ বদলাক বা না বদলাক!

                                                (চিত্রঋণ : Alina Sibera)

15 comments:

  1. কোনো কোনো কবিতা পড়ার পর স্তব্ধ হয়ে অনুভব করতে হয়। তানিয়ার এই কবিতা সেইরকমই। দারুণ লাগল।

    ReplyDelete
  2. অসামান্য॥ এক পৃথিবী ঘুরে আরেক পৃথিবীতে এসে দাঁড় করায়

    ReplyDelete
  3. প্রত্যেকটি কবিতা জীবন্ত, গভীর সংবেদনশীল এবং নান্দনিক। প্রিয় কবিকে শুভেচ্ছা ...

    ReplyDelete
  4. ভিন্ন স্বাদের লেখা। ভালোলাগলো তানিয়া।

    ReplyDelete
  5. খুব ভালো লাগল তানিয়া । শোধনাগার কত বর্জ্যের বন্ধুতা নিয়ে বড় হচ্ছে।দুর্দান্ত ।

    ReplyDelete
  6. কবিতা গুলো আধুনিক ও মননশীল ।খুব ভালো লাগলো ।

    ReplyDelete
  7. শব্দের দ্যোতনায় কেঁপে যায় মনময়ূরী।
    কী মিশেল প্রেম ডানা জুড়ালো তানিয়াপরি।

    ReplyDelete
  8. "পাকদন্ডীতে বসে পৃথিবীর বিনাইন তিল দেখেছেন ঈশ্বর ..."
    অনন্য কিছু উচ্চারণ। মুগ্ধ তানিয়ান কবিতায়।

    ReplyDelete
  9. ভাল লাগল তানিয়া, সবগুলোই-- এই উত্তেজক মানস-অবস্থান হাতছানি দেয়, মন ওঠে, পা চলে না, সেও এক যন্ত্রণা

    ReplyDelete