ন্যুড ও অন্যান্য কবিতা : অনুপম মুখোপাধ্যায়




।। টি পুনরাধুনিকবিতা ।।

‘‘s’il n’existait pas Dieu il faudrait l’inventer.’’- Voltaire


ভাত-পোড়া রুটি

চমৎকার রাত এইঅ্যাত ভালো ঘর
আমাকে খাওয়ার ২-টো রুটি বেলে রেখো
রুটিগাছ ঢেকে দ্যায়। জানালার আলো
সে বাড়িতে থাকি আমি। ভাত খাই রাতে
রাজনীতি করা লোক। মাঝরাতে ফিরে
বৌকে মেয়েকে কি বলে তার রাক্ষসের কথা
বৌ কি বলেছে তাকে। দুপুরের রোদে
কে তার কব্জিতে মৃদু নখ রেখেছিল
দুয়ার গুটিয়ে গেলে থুতুটি লাগাই
হাঁয়ের সুবাস জাগে বাড়ির ভিতর
বুকে থাকে পোড়া দাগ। ভাত-পোড়া রুটি
আঙুলে না ছেঁড়া গেলে। দাঁত দিতে হয়



খড়ের প্রতিমা

ধান ক্ষেতে খেতে এসেছিল খড়ের প্রতিমা
খেল। মুখ মুছে নিল। উঠে চলে গ্যালো
কী যে পরে এসেছিল। বোঝাই গ্যালো না
শাড়ি। নাকি সালোয়ার। লেহঙ্গা অহং। না স্কার্ট
খড় কিছু পড়ে আছে আলো-ছায়া খড়
হিমপথে লেগে আছে। উমের ঝালর



পাগল ছাড়ো রাখো পা

পাগল। রেখেছে তার পা আছে কোথায়
জানালায় সার্ট ছিল। ডো রা কা টা সার্ট
চেয়ারে গামছা ছিল। পরে বোঝা গ্যালো
বালিশ হাফিস হলে খাট চলে যায়
আগুন টিনের চাল। বেড়াল ফেটেছে
তাকে কে বরফ দ্যায়। কে দ্যায় লোশন
আমি যাকে মেরেছি সে কনুই আমার
রেখে গেছে গোল টাকা। লয়ে মম প্রাণ
বরফে মরেছি আমি। লোশনে মরেছি
নিজেকে গরম সুখ। কোন মার দ্যায়




শীতের নূপুর

হ্যালো জেন। কী যে নাম। সোডিয়াম আলো
মেঘ এসে ঢেকে দেবে। সে বালাই নেই
জানালা বেঁকেছে। তার কাচ অনুসারে
যৌনতা ছাড়াও কিছু নির্জনতা পরিবার হয়
অসংখ্য বুদবুদ আর বাতাসের পাশে
চা-দোকান ছায়া মেখে বুঁদ হয়ে আছে
ছায়া দাস। বসে আছে জ্যোৎস্নার দাসী
কে যেন দু-হাত মেলে তাড়িয়ে দিয়েছে
পাঁচিল জড়িয়ে আছে ডিসেম্বর মাস
হাত দিই। উঠে আসে ভরা ইটভাটা
দপ্ করে মুছে গ্যালো সিঁড়ির হাতল
গিয়ার বদল করে। কপিশ বাইক
ওভেনের পাশে রাখা। ঘরোয়া রবার
খাঁ খাঁ। ধূ ধূ। শুনশান। শুধু বিবরণ
ঘুমের প্রস্তুতি নেয়। শীতের নূপুর
বিছানার পাশে মিহি নাচ সেরে নেয়



ন্যুড

হাওয়া যে ঘিরেছে দেহ। তাই হোল ন্যুড
রঙের বাহিরে কোনো ক্যানভাস নেই
সুতোতেই ঢেকে যায় এমন শরীর জীবন
পৃথিবীতে আজও আমি নজর করিনি
দেবীর কোমরে দোলে কাটা হাতগুলো
মায়ের যোনিটি দ্যাখে। সে সাহস নেই
শরীরে সভ্যতা নেই। পোশাকেও নেই
যে কোনো আড়াল থেকে। রস খসে যায়
মনের পাথর। তার সুখস্থান নেই
চোখের সমান মাপে হাত ফুরিয়েছে
মেয়েদের জলে ভাসেএ মুখ আমার
ঠোঁট রেখে জিভ চাইএমন অসুখ
পাথরকে কাটিযথা। মূর্তির পোশাক
যে কোনো দূরত্ব থেকে। সেক্স করে নিই




ক ফি লো জ ফি

মগ হোল সিংহাসন। কফি হ্যাঁ প্রতিমা
ফ্যানা থেকে উঠে আসে কফির প্যাকেট
মগ। দিয়ে খুলে নাও ঠোঁট আর দাঁত
কফি আর চলবে না। চিবুকে হোঁচট
কফির যা বৌ হয় কফির তা বর
কফিগাছ স্পার্ম দ্যায় ক্যাফে’র দেবীকে
কফির জরায়ুযথা শীতল বাগিচা
কফি হয় পিয়াসেরউত্তাপের নয়
কফি তার রঙে আছে। রং মেরে দাও
আমি ভাবি কফি ফেলে রেখে কফি খাওয়া বেস্ট
দুধ ছাড়া কফি কফি কালো হয়। কফি
সেখানে সে সাদা মগ খেলিয়েছে বেশ



।। খোঁজার যদি অ্যাতই শখ, যাও আমার নিরুদ্দেশ খোঁজো।।

(চিত্রঋণ : JITISH KALLAT)

76 comments:

  1. রিয়েলি, দারুণ সব কবিতা, থ্যাঙ্কস।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ নিশীথ। আজ দিবাভাগের সূত্রপাত আপনার শুভেচ্ছাতে হোল।

      Delete
    2. অপূর্ব। এতো অভিভূত ছিলাম পাঠপ্রতিক্রিয়া জানাতে মন্তব্য লিখতে গিয়ে হয়তো কোথাও গণ্ডগোল হয়ে গ্যাছে।

      Delete
  2. Replies
    1. আমারও সাড়া পেয়ে ভালো লাগল

      Delete
  3. "ন্যূড" দুর্ধর্ষ লাগলো

    ReplyDelete
  4. খড়েরপ্রতিমাই সেরা

    ReplyDelete
  5. "শরীরে সভ্যতা নেই। পোশাকেও নেই"...আহা! বড় ভালো লাগল

    ReplyDelete
  6. দারুণ কবিতাগুচ্ছ পড়লাম। মম, বাহিরে, যথা এইসব শব্দগুলো অনায়াস দক্ষতায় ব্যবহার করা দেখে অবাক হলাম। অধুনা-কবিতায় এইসব শব্দ ব্যবহারই হয় না। অথচ এখানে যথোপযুক্ত। বেশ ভালো লাগল কবিতাগুলো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ যুগান্তর। বেশ কিছুদিন পর আপনাকে কবিতায় পেলাম।

      Delete
  7. এইবার একটা মনকি বাত কিয়া যায়ে, তোমার পুনরাধুনিক পর্বের এই পর্বের লেখাগুলো আমায় বেশি ছুঁয়ে যাচ্ছে.... আরএকটু ঝেড়ে কাশলে
    বলা যায় ... বইয়ের লেখাগুলো ছুঁয়ে ছিল ..
    পরবর্তীগুলো স্পর্শ করে যাচ্ছে

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেদিন একটা শিমুল গাছ দেখলাম। তুলোর স্বপ্ন দেখছিল।

      Delete
  8. অসাধরণ সব কবিতা

    ReplyDelete
  9. পড়লাম। সবগুলোই। 'খড়ের প্রতিমা' আবারো পড়তে ইচ্ছা করবে। 'ভাত-পোড়া রুটি'ও ভাল লাগলো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমারও ওগুলো বেশ খারাপ লেগেছে। হা হা হা হা... ভালোবাসা নেবেন।

      Delete
  10. ভাত-পোড়া রটি আর খড়ের প্রতিমা ভাল লাগল

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমারও বেশ খারাপ লেগেছে ওগুলো

      Delete
  11. Vishon bhalo lagollo .speciali nude .sorire sabhyota nei.posakeo nei ..asadharon sob sobder bunot ...sob kobitay ..

    ReplyDelete
    Replies
    1. অসংখ্য ধন্যবাদ সাড়া দেওয়ার জন্য

      Delete
  12. This kind of poetry, no doubt, the sharp treatment of sexual postmortem. Specially, "Nude ","siter Nupur ". And, ur extraction of language from our illness in sexuality is very favorite to me, as it claims the pointed fold where some lid still is not opened.like Sanat and ur others fan,this Punoradhunik episode (after "prokalpo & sfatik") is very seductive!! Ha ha

    ReplyDelete
  13. সবগুলোই ভালো । তবে ন্যুড কবিতার তৃতীয় স্তবক লা-জবাব । কী দৃষ্টি !

    ReplyDelete
  14. Replies
    1. এতক্ষণে একটা অন্য আনন্দ পেলাম। ধন্যবাদ পলিয়ার-ভাই।

      Delete
  15. ট্র্যাডিশনাল কবিতার একটা চলন (ছন্দ) কবিতাগুলোতে জুড়ে দিয়ে অনুপম পাঠককে সঙ্গে করে নিয়ে ওর কবিতা উঠোনে হাঁটিয়ে নেন। তাতে করে অনুপম ওঁর কবিতার ঘর গৃহস্থালি ওঁর নিজস্বতাকেই দেখিয়ে নেয়। নানামাত্রায় নানাভাবে অনুপম ওঁর কবিতা আর নিজেকে পরখ করে দেখছে প্রতিনিয়ত, স্বভাবে অভ্যাসে। ভালো লাগলো এই গুচ্ছটিও।

    ReplyDelete
    Replies
    1. কবির রসাস্বাদন এ-রকমই হবে। রাজার সঙ্গে রাজা যেভাবে কথা বলে।

      Delete
  16. headache chhere jai !!! kotha theke kothay chole jaiii

    ReplyDelete
  17. anonymous ...mrinal ghosh

    ReplyDelete
  18. আমি ভাবি অনুপম রেখে কবিতা পড়াই বেস্ট।

    ReplyDelete
  19. খড়ের প্রতিমা অনবদ্য আর আমার কিন্তু কফিলোজফি টাও ভালো লাগল। তোমার সিগনেচার লেখা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যাঁ। কফিলোজফি লিখে খুব মজা পেয়েছিলাম। এখানে হয়ত একটু আউট অব প্লেস। ধন্যবাদ শুভ।

      Delete
  20. বিমূর্ততা তোমার লেখায় এক অন্য মাত্রা এনে দেয়। এই লেখাগুলোও দারুণ। বিশেষ করে ন্যুড আমার দুরন্ত লেগেছে

    ReplyDelete
  21. পুরো পত্রিকাটা ঘুরে দেখব ভাবলাম। আপনারটায় এমনভাবে থেমে গেলাম যে বলার নয়। যতবারই পড়ছি খিদে বেড়ে যাচ্ছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ। এবার সকলেই 'খারাপ' লিখেছেন। কাউকেই বাদ দেওয়া যাবে না শম্পা পাঠতালিকা থেকে।

      Delete
  22. nude ও অন্যান্য কবিতা----পড়লাম। তুমি ন্যুডিটি কে হাইলাইট করলে নামকরণে। কিন্তু প্রতিটি কবিতাই আলাদা করে উল্লেখ করার মত। বরং ন্যুডিটি এওই স্বাভাবিক মনে হয় আমার যে সেটা আলাদা করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখালে হালকা হয়ে যায়। ইঙ্গিতপূর্ণ হয়ে যায়। তুমিই একবার লিখেছিলে যে অনেক বাজারি পত্রিকায় বিশেষ অংশ হাইলাইট করা হয়। আবার এক্তা কথা না বলে পারছি না। ন্যুদ কবিতাতিতে একতিও নগ্নতা বিষয়ক সরাসরি শব্দ ব্যবহার না করে কি দুর্দান্তভাবে তুমি এঁকেছ বিষয়টাকে। কোনো বায়াস না রেখেই বলছি--আমি এই রহস্যময়তা, আলো আঁধারির সঙ্গেই অনেক বেশি যুক্ত করতে পারি নিজেকে। কততা বলা অপরিহার্য সেটা আয়ত্ত্ব করেছ তুমি। তাই আরো একবার ভালোলাগা জানালাম। কবিতাগুলোয় যে যৌনতার সূক্ষ্ম মোচড় ও খেলা আছে, যে খাদ্য পানীয় ও জীবন চেটেপুতে স্বাদ নেবার ইঙ্গিত আছে----তা মারাত্মক। জয় হো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. খুব ভালো লাগল। 'ন্যুড'-কে হাইলাইট করেছি পর্নমোচী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। শ্লেষাত্মক। আবার বলি, খুব আনন্দ পেলাম।

      Delete
  23. ইসসস----এতগুলো টাইপো!! ঠিক করতে পারবে অনুপম? "পর্ণমোচী দৃষ্টিভঙ্গী'টা ভাবিনি। ঠিকই বলেছ। ভালবাসা নিও।

    ReplyDelete
    Replies
    1. টাইপো না থাকলে টাইপিস্ট আর কি-প্যাড একই হয়ে যায়। হিউম্যান এরর। থাকা দরকার। ভালোবাসা।

      Delete
  24. মিতুল দত্তDecember 16, 2016 at 6:18 AM

    'অাঙুলে না ছেঁড়া গেলে। দাঁত দিতে হয়'

    প্রথম লেখাটা অামার সাংঘাতিক লেগেছে।

    ReplyDelete
  25. কবিতাগুলি এসময়ের অনাকানেক উচ্চারণ থেকে পৃথক। কেন? এই প্রশ্নটি আমি নিজেকেই করলুম। আসলে পড়তে ভালো লাগছিলো।কতো আপাত কথন, অথচ মেধাটিও মিশে আছে। অনন্য কি একেই বলে।তাই মনে হল। তুমি আর অমিতাভ (প্রহরাজ)। তোমরাই প্রকৃত দশক।
    আমার শুভেচ্ছা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. দশকে আমার আর বিশ্বাস নেই। শূন্য দশক আমাকে আর কোনোরকমভাবে উজ্জীবিত করে না। কিন্তু তোমার কমেন্ট করল।

      Delete
  26. সব কবিতাগুলোই অন্যমাত্রার স্বাদ আছে।তবে 'ন্যুড'কবিতাটি অসাধারণ

    ReplyDelete
  27. অনুপমের কবিতায় নতুন করে বলার আর কিছু নেই । অনুপম সম্পূর্ণ নিজের কবিতাশরীর গড়ে ফেলতে পেরেছে । মনে হয় আশাতিরিক্ত শত্রু এবং শত্রুশিবিরও নিজের বিপক্ষে গড়ে ফেলতে পেরেছে । এখনকার বাংলা কবিতা রচনার জগতে এটাই মানদণ্ড ; প্রতিষ্ঠানের পোঁদ না চেটেও কটা শত্রুশিবিরকে ক্ষেপিয়ে তোলা যায় ।

    ReplyDelete
  28. চমৎকার লিখেছিস।ভাত-পোড়া রুটি, শীতের নূপুর আর কফিলোজফি বেশি ভাল লাগলো। হাতের পাশেই থাকা উপাদান গুলো অন্য হয়ে, খোলামুখ হয়ে পাঠককে তার নিজের মত করে কবিতাগুলিকে পেতে সহায়তা করবে।পুরো গুচ্ছটিতেই কালোর ওপর সাদা মগের খেলা জমে গেছে।এ একজন বৃদ্ধেরই যতসামান্য প্রতিক্রিয়া।

    ReplyDelete
    Replies
    1. যে নিজেকে বৃদ্ধ ভাবে, তার তো বার্ধক্য দূরস্ত বলেই জানি :) ভালোবাসা রঞ্জন-দা

      Delete
  29. ন্যুড এর পরেই রাখবো কফিলোজি’কে তারপরেই খড়ের প্রতিমা, শীতের দুপুর, ভাত-পোড়া রুটি। এত্তোভালো ক্যামনে লিখেন দাদা?। আপনার জন্য এই শীতে ভেজা দূর্বাঘাসের শুভেচ্ছা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঋণী করলেন মোকসেদুল ভাই। ভালোবাসাতেই শোধ করলাম।

      Delete
  30. বটুক মহারাজDecember 18, 2016 at 7:42 AM

    শালা কবিতা কবিতা। উফফ শালা বড্ড খিস্তোতে ইচ্ছে করছে। বহুদিন এমন নাড়িয়ে দেয়নি কেউ। তবে আমি চাইলে ক্যানো যে ন্যাকড়া জড়িয়ে দাও বড্ড জ্বলন মমটির অঙ্গে উফফফ

    ReplyDelete
  31. অন্যরকম লাগলো লেখা গুলো । খড়ের প্রতিমা, ন্যূড, কফিলোজফি এই তিনটে বেশী ভালো লেগেছে ।

    ReplyDelete
  32. আমি সত্যি কথা বলতে এখনও তোমার আগের লেখা তেই আটকে আছি। মাঝে মাঝেই পড়ছি।এগুলোর মধ্যে আমারও খড়ের প্রতিমাই সব চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।এবং কফির কবিতা টি মনেহয় আরাকু না গেলে হত না।

    ReplyDelete
  33. খড়ের প্রতিমা, ন্যুড ছুঁয়ে গেল।

    ReplyDelete
  34. dhan khete esechilo kharer protima / kete dewa sabdotai toh sabcheye bangmoy / daarun,bkhyateet,ami abhibhuto

    ReplyDelete
  35. ছ’টি কবিতা। পুনরাধুনিক। আর, তার আগে ভলতেয়ারের অতিপরিচিত, অতি ঋদ্ধ একটি মন্তব্য— এতটাই আবেদন যে সেই কবে Flaubert তাঁর ‘Dictionnaire des idees recues’-এ রাখেন; আর আপনি, এখন, ছয়টি পুনরাধুনিক কবিতার ওপরে রাখলেন। শিরোনাম, ‘ন্যুড ও অন্যান্য কবিতা’, যদিও ‘ন্যুড’, ক্রমানুসারে পঞ্চম কবিতা, অর্থাৎ পেনাল্টিমেট । আর শেষ কবিতা ‘কফিলোজফি’, কফি+ফিলোজফি। পুরো নির্মাণ সচেতনভাবে, বিনির্মাণও। অজস্র সম্ভাবনা, যা, আমার ব্যক্তিগত মতে, বর্তমান কবিতাস্ফুরণের প্রধান গুণ হওয়া আবশ্যক।
    ‘ভাত ও পোড়া রুটি’-তে আমি যতটা মানিক(বন্দ্যোপাধ্যায়) দেখি, ততটাই ফ্রয়েড। আর ‘খড়ের প্রতিমা’? প্রতিমা শব্দটি আমি প্রতিম থেকে পাই, ফলত আমার কাছে সে স্বাধীন নয়। আর অদ্ভুত, আমি তো কিছুদিন আগে পর্যন্ত খেতে কে ক্ষেতে-ই দেখেছি, তদ্ভব জ্ঞান হবার পরেও। যখন ‘লেহেঙ্গা’ আমাকে টিন(teen) করেছিল, তখনও।
    তৃতীয় কবিতার ছাড়া ও রাখা— এ দ্বন্দ্ব তো আজও আমার গেল না, যখন ডোরাকাটা দ্বিবর্ণের আর পুরো কবিতা জুড়ে শিকার ও প্রহার।
    পঞ্চম কবিতা ‘ন্যুড’, আমার কাছে অনঙ্গ হয়েছে ‘শীত ও নূপুর’ থেকে। এই চতুর্থ কবিতাটিকেই আমি ভরকেন্দ্র ধরব। বস্তুত, এর গতিজাড্যের কারণেই পরবর্তী ‘ন্যুড’ কবিতা জুড়ে আমি একটুও ‘নেকেড’ দেখিনি, যতটা প্রণাম দেখলাম।
    শেষ কবিতা ‘কফিলোজফি’, যেখানে মগ হল সিংহাসন, হ্যাঁ, মুলুক নয়। যেখানে কফির অবস্থান ওই মগ-এ এবং আবার ‘প্রতিমা’। পুরো কবিতা জুড়ে শুধু ‘ফেলে’ শব্দটি কাটা, পঞ্চম জোড়ার দ্বিতীয় লাইনে। ‘ফেলে রেখে’— এই দুটি অসমাপিকা ক্রিয়া ক্রিয়াবহুল, ‘ফেলে’কে কেটে ‘রেখে’কে রাখাই অবশ্যম্ভাবী; না হলে কালো কফির জরায়ু শীতল বাগিচায় কীভাবে খেলাবে সাদা মগ।
    হ্যাঁ, পাঠক হিসেবে খোঁজার শখ তো এটুকুই; আর, কবি, কবিতা কিংবা ঈশ্বর যাই খুঁজি না কেন, খুঁজতে তো নিরুদ্দেশ লাগেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে, এ তো অবিস্মরণীয় প্রতিক্রিয়া। আমার প্রত্যাশার বাইরে ছিল। ধন্যবাদ দিচ্ছি না। মাথা পেতে নিলাম।

      Delete
  36. বড় আনন্দ পেলাম। আলাদা করে কিছু উল্লেখ করছি না। পেয়ে গেলাম দৃশ্যকবিতাও। এই যে চলন, খুব ইচ্ছে হয় অনুসরণের। একটা শব্দ বাহুল্য বোধ হল। ওই 'খড়ের প্রতিমা'-য় 'খেল'শব্দ। অভিনন্দন আবার।

    ReplyDelete
  37. বড় আনন্দ পেলাম। আলাদা করে কিছু উল্লেখ করছি না। পেয়ে গেলাম দৃশ্যকবিতাও। এই যে চলন, খুব ইচ্ছে হয় অনুসরণের। একটা শব্দ বাহুল্য বোধ হল। ওই 'খড়ের প্রতিমা'-য় 'খেল'শব্দ। অভিনন্দন আবার।

    ReplyDelete