ল্যাজারাস
আমি ল্যাজারাসের মতো মৃত্যুকে ঠকিয়ে এসেছি
আমি হা হা করে হেসে ওঠি, পরক্ষণেই বিপুল
অসহায় বোধ করি
আমি মরে গেলে যদি একটি কুকুরও কাঁদে
তাকে লাথি মারবো
কিছু কুকুর কি আমাকে স্পর্শ করে ছিলো না!
আমার কখনও ঘর ছিলো না, ঘরে ফেরার তাড়া
ছিলো না
বেশি টাকা হাতে এসে গেলে বিব্রত লাগে আমার
প্রশংসা শুনলে নিজেকে লিঙ্গান্তরিত নারী মনে হয়
কেউ ফোন দিলে মনে হয় এই বুঝি আমার শয্যা কামনা করবে
পায়ুকামে নিবৃত্তি নেবে সমাজের গভীরতর অসুখ।
এই জীবনে সমর্পণ শিখিনি
চিরকাল ভেঙেছি শুধু, কোন নারী দশ মাস
আমার বীর্য
পেটে লালন করে বেড়াবে ভাবতেই আমার অবশ লাগে।
যুবতীরা গোষ্ঠীপিতার আশীর্বাদ নিয়ে
স্তনে ও জঙ্ঘায় বিবাহ রাত্রির ক্ষতে
চারপাশে ক্লীন্ন কদর্যতা দারুণ সংবর্তের ভেতর সারা শরীরে আমার
লাল লাল কামড়, অশ্লীলতার জ্বরে সারা শহরের চোখ লাল।
আবার কেঁদে ফেলবো
আমার কাঁধে সূর্য,দুই বাহুতে দুই
সমুদ্র
বিবৃতির এতো ছড়াছড়ি, প্রত্যয় ঘোষণার
এতো কাড়াকাড়ি
অথচ আমাদের হৃৎপিণ্ডে যখন আঘাত তখন আমরা নিশ্চুপ?
আমাদের মিলিত কণ্ঠস্বরও কোথাও এসে দূষিত হয়ে গেছে
সমষ্টি হয়ে গেছে চোরগোষ্ঠীর আঁতাত
দুই তিন জনের বেশি একসঙ্গে দেখলেই এখন সন্দেহ হয়,
আবার কেঁদে ফেলবো, যদি শিশুর মতো
ছুঁয়ে দিতে পারো
যদি চোখে চোখ রেখে গেঁথে দাও স্বপ্ন
হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে বসে যাবো
সীমাবদ্ধ মানুষের অনুগত ঝরা পাতার লজ্জায়
বৃষ্টির মতো আরও একবার কেঁদে ফেলবো
চিৎকার করবো যে পর্যন্ত না কেউ শোনে
অকস্মাৎ বধ্যভূমি কাঁপিয়ে নিজের বিরুদ্ধে নিজেই হাসবো
আয়নায় পিতার মুখ দেখে থু থু ফেলবো
সব ক্রোধ ঠিক এইভাবে মাতাল মহিষের মতো ছুঁড়ে দিয়ে
তোমাদের দিকে হেকে উঠবো―শালা বানচোত।
আদি
মধ্য এশিয়ার নীল গাভী
তোমরা আমাকে নিলে না কেন
আমার বুকে নত ভেজা পাতার নিবেদন
সময়ের প্রার্থিত সাড়ায় আসল তাহলে কোন জন?
ভস্মের পর দাঁড়িয়ে প্রকাশ করে আদি পরিচয়
কে আজ প্রার্থনার মতো প্রাচীন
হাওয়ায় দীর্ঘ
বয়সে তৃপ্ত
রূপে যৌবনমন্থ মাতাল?
নাকি স্ফুটমান বীজ
দুয়ারের কাছে কে অপেক্ষমাণ অতিথি!
কে? কে আজ নীলিমার সাগরে প্রবেশমান মেঘ
শিশুর গালে সোনার পয়সার মতো গোল রোদ
তিনি তোমাদের সমসাময়িক, অহরহ পোষাক
বদলানো মানুষ।
কবিতার চেয়ে জীবন বড়
একটি পরিপূর্ণ গোলাপের চেয়ে বড় লাল রঙ
কবিতার চেয়ে জীবন বড় উত্তাপের
আজ তেমন নগ্নতা নেই কোথাও
একজন নারী তার পুরুষের দশটা ছবি দিয়েছিলো ফেসবুকে
বাইশ জন কিশোরী পরীক্ষায় পাস করে ভি চিহ্ন দেখিয়েছিল
একজন গর্ভবতী তার সন্তানের প্রতি কৌতূহল নিয়ে
হাসপালের ৩৪২ নাম্বার কেবিনে পড়েছিলো
দুইজন স্ত্রী একসঙ্গে বসে মনে করেছিল তাদের সাবেক শৈশব
কিন্তু এখানে ভবিষ্যৎ জন্ম দেবার মতো যোগ্য
কোন মানবী নেই,যে ভালোবেসে
ফেলবে লাল মৃত্যু
গৃহস্থালির চেয়ে বেছে নেবে একটি পরিপূর্ণ আলিঙ্গন
চাল এবং ডালের দানা ছাড়া যে মেয়ে কিছুই চেনে না সে কি করে
প্রণয় সঙ্গিনী হয়েছিলো?
এই তোড়া ওরা দিয়েছিলো
রক্তের উত্তাপে ফোটা লাল ফুল,বারুদের গন্ধে মেশা ঝাঝ
বিমুখ মাটির শরীর খুঁড়ে কে আনবে দুরন্ত
ঢল?
হিসেবের খাতায় শুধু পাওয়া গেলো ধোপা, নাপিত, তেল-নুন-বাসা।
জীবনটা ছেলেখেলা নয়
অনেক বড় হয়েও আমি জানতাম কেবল চুমু খেলেই
পেটে বাচ্চা হয়ে যায়। যেসব বিষয় ছেলেরা অনেক আগেই জেনে বসে আছে,আমি থাকতাম সর্বশেষ
ব্যক্তি যে এইমাত্র এইসব জেনেছে। একদিন একটা মেয়েকে চুমু খেলাম। সে বললো,জীবনটা ছেলেখেলা নয়। আমি
তাকে অন্য গালে আরেকটা চুমু খেয়ে বললাম,দয়ালু বাঘ বলতে কিছু নেই। মেয়েটি আমাকে তার স্তনের ওপর টেনে
নিলো। বললো,ওই যে কামরাঙার
ডাল,তার নিচে আমাদের
সব উৎকণ্ঠা পুঁতে রাখবো নিরাপদ বিশ্বাসে। আমরা হেঁটে যাই শহরের কিনারে,যেখানে সূর্য এসে অস্ত
গেছে আমাদের শরীরের ওপর। আসলে সূর্য কখনও অস্ত যায় না,পৃথিবী ঘুরে যায় মাত্র। না দেখতে পাওয়ার
নামই অস্ত। মেয়েটি বালুতে শুয়ে পড়ে কবিতা লিখলো,আমি পাথরের উপর বসে। তারপর হেসে ফেলে একে
অপরের কবিতা টেনে নিয়ে পড়লাম। চুমু খেলাম,গোল হয়ে হাত ধরে নাচলাম। লুকিয়ে গেলাম
পাহাড়ের আড়ালে। আমি জানতাম কেবল জড়াজড়ি করলেই বিয়ে হয়ে যায়।
(চিত্রঋণ
: Viktor Vasnetsov)
অনেক ভালো লাগলো কবিতাগুলো। আমিও জানতাম ফুল দিলেই বিয়ে হয়ে যায়। বাক্-এর জন্য শুভকামনা।
ReplyDeleteভালো লাগলো ভাই, মাজহার। স্বাগতম...
ReplyDeleteবাহ.... মাজহার... বাহ....
ReplyDeleteঅপূর্ব !
ReplyDeleteদারুণ সব কবিতা ! খুব ভালো লেগেছে
ReplyDeleteসত্যি অসাধারণ।
ReplyDeleteসত্যি অসাধারণ।
ReplyDeleteশেষ কবিতা অপূর্ব
ReplyDeleteভালো লিখেছেনঃ অসাধারণ
ReplyDelete