আগ্নেয়গিরি
এক আগ্নেয়গিরির জেগে ওঠা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ব?
আমি কি ঘুমিয়ে পড়তে পারি এই বিস্ফোরণের পরেও!
আমার মুখের ওপর ছিটকে পড়ছে লাভা স্রোত
আমার গলা দিয়ে নেমে যাচ্ছে আগুন
আমার পেট ভর্তি কয়লা
আমি কি ঘুমিয়ে পড়তে পারি এই আলোড়নের ভেতরে
এই গুমগুমের ভেতরে আমি কি জাগব না আর একবার?
একের পিঠে এক হয়ে রয়ে যাচ্ছি এই সবের ভেতরে
এই সব যা কিছু ঘটে যাচ্ছে, ভেতরে বা বাইরে –
তোমাদের থেকে অনেকটা দূরত্বে দুটো পিঠ যা
তোমরা দেখতে পাচ্ছ না, তোমাদের চোখ ভর্তি অন্ধকার
আমি ঘুমিয়ে পড়ার পরে যদি তোমরা জেগে ওঠো
আগ্নেয়গিরি নিভে গেলে যদি তোমরা জেগে ওঠো
আমাদের ফেরানো পিঠের দিকে যদি তোমরা জেগে ওঠো -
দেরী করে ঘুম থেকে উঠে সূর্যোদয় দেখা হল না বলে
তোমাদের মুখ থেকে অনর্গল বেরিয়ে আসবে আফসোসের টুকরো
আমি কি এই সব না-দেখার জন্য ঘুমিয়ে পড়ব?
আগ্নেয়গিরিকে পাশ ফিরিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ব?
অ্যালজোলাম নিয়ে ঘুম সরে গেছে
আমি জেগে থাকতে থাকতে দুই গুনেছি, তিন গুনেছি,
চারের ঘরে এসে ফিরে গেছি জ্বালামুখে
আমার চোখ ভর্তি ছাই
আমার কান ভর্তি সীসে
আমার মুখ ভর্তি আগুন
এই জাগ্রত আগ্নেয়গিরির পেটের ভেতরে পুড়ে গিয়ে
আমি কি ঘুমিয়ে পড়তে পারি?
সিনেমা
এরপর চোখ বন্ধ হয়ে গেল। নিভে আসা আলোতে বোজা চোখের
দিকে তাকালে হঠাৎই ধ্যানী বুদ্ধের
কথা মনে পড়ে। লাইম লাইটের নিচে এখন থেকে গেছে কাহিনির শেষাংশ।
ইন্টারভ্যালের কথা মনে আছে? কাহিনির চমকে দিয়ে থেমে
যাওয়া কিছুক্ষণ? চিপসের ছেঁড়া প্যাকেটের ভেতর হাত চালিয়ে পোড়া কফির চুমুক? বেল
বেজে গেলে সিট নাম্বার ভুলে যাওয়া যথারীতি।
অন্ধকারেও কেউ কেউ হাঁটু ডিঙিয়ে আসে। দু চারটে চেয়ার
টপকে গিয়ে বসে। টর্চের চলকে যাওয়া আলো ফিরে যায় শেষবারের মত। পর্দার দিকে মগ্ন
থাকে সারিবদ্ধ চোখ।
লাস্ট বেল বেজে উঠেছে বুঝি! আসন ছাড়ার উশখুশ নিয়ে
ভাঙা হলে আলো জ্বলে ওঠে। আর চোখ বুজে যায়! লাইম লাইটের নিচে সাদা স্ক্রিন জুড়ে
লাফিং বুদ্ধের হাসি ভেসে আসে।
লাইন
এটিএম থেকে লাইনের দূরত্ব মেপে
তুমি টাকার কাছে পৌঁছে গেলে।
গোলাপি সুগন্ধ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলে।
ব্যাগ থেকে শূন্যতা টেনে নামাতে গিয়ে
পার্সের ঝাপটায় তোমার চোখ নিভে এল।
একটা চেক অপেক্ষায় ছিল মেট-এর
ট্র্যানসাকশান থেকে ফিরতি পথ
তোমায় কোথায় নিয়ে যেতে পারে ভাবতে ভাবতে
লাইন ফুরিয়ে এল।
ফিক্সড ডিপোজিটে রাখা শেষ সম্বল
ভাঙিয়ে খাওয়ার উপায় খুঁজতে গিয়ে
সেই তোমাকেই লাইনে দাঁড়াতে হল!
(চিত্রঋণ : Viktor Vasnetsov)
সিনেমা। আর লাইন। দুটোই দারুণ লাগল।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteতিনটি কবিতাই ভালো লেগেছে। আপনার কবিতায় যে উন্মুখ ছবি থাকে তা এখানেও আছে। আর তার থেকে উঠে আসে কবিতা-শরীরের আলো। তাই ভালো লাগে।
ReplyDeleteভাললাগা
Deleteকেমন যেন দুঃখি-দুঃখি আঁচ পেলুম ।
ReplyDeleteআঁচ পেলেই হল
Deleteআগ্নেয়গিরি খুব সুন্দর। ভালো লাগলো অন্য দুটোও। তবে মলয়দা ঠিকই বলেছেন, তিনটের গায়েই যেন বিষাদের মিহি কুয়াশা লেগে আছে। :)
ReplyDeleteনো মোর বিষাদ, প্লিজ
Deleteকারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ... পুরো চাল বদলে দিলে। সিনেমা। লাইন বলে দিচ্ছে তোমার ভাষ্য এন্তাজের মতো সম্ভ্রান্ত, কিন্তু আভিজাত্য হীন
ReplyDeleteদারুণ
তোর লেখাও অন্য বাঁক নিয়েছে
Deleteপরস্পর বিরোধীমূলক দ্বন্দ ও এক দর্শন তুষ্টির কবিতাকে অন্যমাত্রা দেয়। ওঁর ভাষা সহজ সাবলীল। আমার ভালোলাগা জানালাম, তুষ্টি।
ReplyDeleteভাল লাহল খুব আমারও
Deleteভালো লাগল
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteপড়লামl আসলে যখন বোধের উজ্জ্বলতায় কবিতা প্রতিভাত হয়ে ওঠে তাতে অবগাহন করেও বড় সুখ বোধ হয় l তোমার কবিতায় তাই পেলুম l ভালো থেকো l
ReplyDeleteতুমিও ভাল থেক।
Deletelava berie porche, tate atke porche atm er line e darano manush gulo
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
Deleteবেশ বললি
Deleteপ্রথম কবিতা-টি, "আগ্নেয়গিরি", ভাল লাগল।
ReplyDeleteধন্য
Deleteযত পড়ছি আপনার কবিতা তত ভালোবাসা জন্মাচ্ছে। ভীষণ একাত্মতা খুঁজে পাই আপনার লেখায়।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteফাটাফাটি তো। খুউউব ভালো, খুব।
ReplyDeleteতুমিও খুউউউউউউব ভালো। খুব খুব।
Deleteআগেই পড়েছি, আবার পড়লাম " আগ্নেয়গিরি"-র লোভে
ReplyDeleteপুড়ে যাবে। সাবধান
Deleteআগ্নেয়গিরি, সিনেমা, লাইন তিন জুয়েল আরও একবার তুষ্টির আলো চমকালো।
ReplyDeleteধন্য
Deleteসুন্দর দৃষ্টি, অনুরূপ উপস্থাপন।
ReplyDeleteথ্যাঙ্কু
Deleteভালো লাগল
ReplyDeletethnks
Deleteসিনেমা-- চমৎকার, তুস্টি।দু'বারই চোখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আর ভাবনা যাত্রা করছে ধ্যানী বুদ্ধ থেক্লে লাফিং বুদ্ধ পর্যন্ত, মাঝে চিপস কফি লাইম লাইট আর অবস্থান(সীট) ভুলে যাওয়া একা কাহিনী। কিন্তু, "একটা চেক অপেক্ষায় ছিল মেট- এর/ট্র্যান্সাকশান থেকে ফিরতি পথ/্তোমায় কোথায় নিয়ে যেতে পারে ভাবতে ভাবতে/লাইন ফুরিয়ে এলো"--এরপর চুপ করে থাকি ,মুখে কথা সরে না আর, পরের তিনটে লাইন কেমন দুর্বল লাগে, হয়তো আমারই ভুল।
ReplyDeleteওই তিনটে লাইন নিয়ে আমারও মনে সন্দেহ ছিল, তুমি জিনিয়াস রঞ্জনদা
DeleteVery nice presentation.
ReplyDelete